৭-ই সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ থেকে খালি চোখে দেখতে পারবেন পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ।
আসসালামু আলাইকুম আশা করি সকলে অনেক ভালো আছেন। আজকে আবারো একটি ভিন্নধর্মী টপিক নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হলাম। চাঁদ নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। আকাশে ভেসে থাকা পৃথিবীর এই একমাত্র উপগ্রহটি আমাদের রাতের আকাশের সৌন্দর্য বাড়ায়, আবার মাঝে মাঝে আনে এক অদ্ভুত রহস্যময়তা। তারই একটি দৃষ্টিনন্দন ঘটনা হলো চন্দ্রগহণ। ২০২৫ সালের অর্থাৎ এই বছরের ৭ […] The post ৭-ই সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ থেকে খালি চোখে দেখতে পারবেন পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। appeared first on Trickbd.com.

আসসালামু আলাইকুম
আশা করি সকলে অনেক ভালো আছেন। আজকে আবারো একটি ভিন্নধর্মী টপিক নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হলাম। চাঁদ নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। আকাশে ভেসে থাকা পৃথিবীর এই একমাত্র উপগ্রহটি আমাদের রাতের আকাশের সৌন্দর্য বাড়ায়, আবার মাঝে মাঝে আনে এক অদ্ভুত রহস্যময়তা।
তারই একটি দৃষ্টিনন্দন ঘটনা হলো চন্দ্রগহণ। ২০২৫ সালের অর্থাৎ এই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর রাত থেকে ৮ সেপ্টেম্বর ভোর পর্যন্ত আকাশে দেখা যাবে এক অসাধারণ দৃশ্য যেটা হলো পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগহণ। যেখানে বাংলাদেশ থেকে এই ঘটনা দেখা খুব বিরল সেখানে এই ৭-ই সেপ্টেম্বর তা বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বহু দেশ থেকে খালি চোখেই দেখা যাবে। এ সময়ে চাঁদ লালচে আভা ধারণ করবে, যাকে বলা হয় ব্লাড মুন।
চন্দ্রগহণ কেন হয়?
চন্দ্রগহণ ঘটে তখনই, যখন পৃথিবী সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে এসে দাঁড়ায় এবং পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপর পড়ে। সহজভাবে বললে, সূর্যের আলো পৃথিবী আটকিয়ে দেয়, ফলে সেই আলো সরাসরি চাঁদের গায়ে পৌঁছাতে পারে না। চন্দ্রগহণের আবার কয়েকটি ধাপ রয়েছে-
1. আংশিক গ্রহণ (Partial Eclipse): চাঁদের একটি অংশ পৃথিবীর ছায়ায় ঢেকে যায়।
2. পূর্ণগ্রাস গ্রহণ (Total Eclipse): পুরো চাঁদ পৃথিবীর ছায়ায় ঢেকে যায়।
3. আধোছায়া গ্রহণ (Penumbral Eclipse): চাঁদ শুধু পৃথিবীর আধোছায়ায় প্রবেশ করে, ফলে খুব হালকা ছায়া দেখা যায়।
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ যা ঘটবে তা হলো পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগহণ, অর্থাৎ পুরো চাঁদ পৃথিবীর ছায়ায় ঢাকা থাকবে।
কেন এই চন্দ্রগহণকে ব্লাড মুন বলা হয়?
পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগহণের সময় চাঁদ কালো হয়ে অদৃশ্য হয়ে যায় না, বরং লালচে আভা ধারণ করে। এই লালচে রঙের কারণ হলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল। আগেই বলেছি এই পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ এ চাঁদ ও সূর্যের ঠিক মাঝে থাকে পৃথিবী। তা সূর্যের আলো সরাসরি চাদে পৌছায় না। প্রথমে সূর্যের আলো পৃথিবীতে এসে পরে। এরপর পৃথিবী সূর্যের আলো থেকে নীল রঙ শোষণ করে নেয়। ফলে অবশিষ্ট লাল রঙ চাঁদ এ গিয়ে পড়ে। তাই এসময় চাঁদ কে লাল রঙ এর দেখায়। আর চাদের এই রক্তিম রঙের জন্যই এসময় চাঁদ কে ব্লাড মুন বলে।
চন্দ্রগহণের সঠিক সময় (বাংলাদেশ অনুযায়ী)
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের হিসাবে, ৭ সেপ্টেম্বর রাতে শুরু হয়ে এই গ্রহণ চলবে ৮ সেপ্টেম্বর ভোর পর্যন্ত। সময়গুলো হলো
চন্দ্রগ্রহণ শুরু হবে রাত ৯:২৮ মিনিট থেকে। অর্থাৎ এই সময় থেকে চাঁদ ধীরে ধীরে লাল হতে শুরু করবে। এরপর রাত ১০:২৬ মিনিটে চাদের প্রায় অর্ধেক লালচে আভা ধারণ করবে। এবং রাত ১১:৪৭ মিনিটে চাদের রঙ পুরোপুরি লাল হয়ে যাবে। চাদের এই পূর্ণ লাল হয়ে থাকা চলবে রাত ১ টা পর্যন্ত। এরপর চাঁদ ধীরে ধীরে আবার লাল থেকে নিজের আসল রঙ এ যাওয়া শুরু করবে। এই সম্পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ শেষ হবে রাত ২:৫৫ মিনিটে।
অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে রাত ১১:৪৭ মিনিট থেকে প্রায় ১:০০টা পর্যন্ত খালি চোখেই দেখা যাবে রক্তিম পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগহণ।
কোন কোন দেশ থেকে খালি চোখে দেখা যাবে?
এই গ্রহণ কেবল বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর একাধিক অঞ্চল থেকেই দেখা যাবে। এশিয়ার সকল দেশসহ, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপের অধিকাংশ অঞ্চল থেকে এই পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে। তবে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার কিছু অংশে এই চন্দ্রগ্রহণ আংশিক চন্দ্রগ্রহণ হিসেবে দেখা যাবে।
এটি সূর্যগ্রহণের মতো বিপজ্জনক নয়। সূর্যগ্রহণ দেখতে চোখে বিশেষ চশমা ব্যবহার করতে হয়, কিন্তু চন্দ্রগহণ সম্পূর্ণ নিরাপদ। ফলে আপনি বাড়ির ছাদ, খোলা মাঠ বা যে কোনো জায়গা থেকে সরাসরি আকাশের দিকে তাকিয়েই উপভোগ করতে পারবেন। তবে দূরবীন বা টেলিস্কোপ ব্যবহার করলে চাঁদের রঙ ও আকার আরও স্পষ্টভাবে দেখতে পারবেন।
চন্দ্রগ্রহণ নিয়ে কুসংস্কার
আমাদের দেশে চন্দ্রগ্রহণ নিয়ে অনেক গল্প আর কুসংস্কার প্রচলিত আছে। কেউ বলেন এটি অশুভ সংকেত, কেউ মনে করেন খাবার-দাবার নষ্ট হয়ে যায়, আবার অনেক পরিবারে গর্ভবতী মায়েদের বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়। এসব বিশ্বাস প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চলে আসলেও এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
আসলে চন্দ্রগ্রহণ একেবারেই স্বাভাবিক ঘটনা। যখন পৃথিবী সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে এসে দাঁড়ায়, তখন পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপর পড়ে। এটাকেই আমরা চন্দ্রগ্রহণ বলি। এখানে কোনো রহস্য নেই, কোনো অশুভ শক্তি নেই, শুধু প্রকৃতির নিয়মে তৈরি হওয়া এক মহাজাগতিক দৃশ্য।
শেষ কথা
চন্দ্রগ্রহণ খুব কমই বাংলাদেশ কিংবা এশিয়া মহাদেশের দেশ গুলোতে দৃশ্যমান হয়। তাই আপনাদের বলবো এটা কোনোভাবেই মিস করিয়েন না। কারণ পরবর্তী আবার কবে এমন পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ বাংলাদেশ থেকে দেখা যাবে তাও এই সময়ে তা বলা মুশকিল। অনেকক্ষেত্রে চন্দ্রগ্রহণ রাত ২টা-৩টায় শুরু হয় যেটা দেখা মুশকিল হয়ে যায়। তবে রাত ৯:৩০ টা থেকে ১ টার মধ্য দেখা অনেকের ক্ষেত্রেই সম্ভব।
আজকের পোস্ট এই পর্যন্তই। আশা করবো আপনাদের ভালো লাগবে। দেখা হবে পরবর্তী কোনো পোস্টে। সে পর্যন্ত সকলেই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।
The post ৭-ই সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ থেকে খালি চোখে দেখতে পারবেন পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। appeared first on Trickbd.com.
What's Your Reaction?






